তারাধূলিপথ
৩২
ভাবছি একদিন,
আমাদের যাওয়া হলো রূপের ওপার—ঘন বাঁশখেত,
মাঝে মাঝে ধইঞ্চাবনের ঝিরি, আরো দূর অন্ধ
সুরের শিস যেখানে পত্রজীর্ণ রোদে ঘুমিয়েছে মোনামুনি বনে—খাঁড়িপথ
ধরে ভেড়ারা চলে যাচ্ছে ইপিল ইপিল বাগানের দিকে,
নিচেই পান্না ফুলের ঝাড়—ঘাসের জীবন হেঁটে
হেঁটে তিতি আর ভেড়াগুলো চেয়ে আছে ভাসমান স্তব্ধতায়: কেউ নেই, কেবল শূন্য থেকে ঝরে পড়ছে রূপের নিহিতার্থ বাঁশি—
এমন নিস্তরঙ্গ দুপুর—ঘাসের উপর এলিয়ে পড়া কাকের ছায়াকেও মনে হয়, হাজার
হাজার নিমবাগানের দূরে একটি নদী, ভূ-বিপুল উপত্যকা পার হয়ে
এইসব কণ্ঠিফুলের ঝোপ, ইপিল ইপিলের সুরে ঘুমিয়ে পড়েছে বহুদিন—
কেউ একজন অগ্রহায়ণের পাশে সমস্ত বিস্বাদ, উদ্বৃত্ত জীবন নিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে ধীরে,
তার চারদিকে পাইনের সারি, পাখিদের আতাগাছ উড়ে
যাচ্ছে লীন মেঘে, পাতার বাঁশিতে সুর, আমের
কাষ্ঠল বীজে তারাদের আলো লেগে লেগে কী আশ্চর্য ভেসে যাচ্ছে মৃতদের চিরায়ত মুখ—!
ফোটা ফোটা টিউলিপ খেতে কারা যেন ইঁদারা থেকে এগিয়ে দিচ্ছে পানি,
কেউ কেউ টিউলিপের আঁটি বেঁধে অপেক্ষা করছে মৃত্যুর—যেন মরণও ফুলের বাজার—!
কোথাও, তুমি ও
তোমার সমস্ত থাকা অথবা না থাকার বিবমিষা যেখানে প্রতিদিন একটি নৌকা আসে, যায়, পাক খায় অন্ধ ঘূর্ণনের স্রোতে—
কেউ, তিতির ছোট
ছোট আঙুল ধরে ডেকে যাচ্ছে পাতায়—যেখানে ঘুম আর এস্রাজ হলুদ
হচ্ছে ধীরে—
No comments:
Post a Comment