পাবলো নেরুদা
এটুকু বলাই যথেষ্ট মনে করছি যে, পাবলো নেরুদা (১২ জুলাই ১৯০৪- ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩) ছিলেন একজন চিলিয়ান কবি
ও রাজনীতিবিদ, তাঁর প্রকৃত নাম ছিল নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো। পাবলো
নেরুদা তাঁর ছদ্মনাম হলেও পরে নামটি আইনি বৈধতা পায়। কৈশোরে তিনি এই
ছদ্মনামটি গ্রহণ করেছিলেন।
নেরুদার সকল সাহিত্যকর্মে আমরা তাঁর সহজাত প্রকাশ ও নিজস্ব ধারার সমাবেশ ঘটতে দেখেছি। কবিতা
তার মধ্যে অগ্রগণ্য। যেমন একদিকে তিনি
লিখেছেন "টোয়েন্টি পোয়েমস অফ লাভ অ্যান্ড আ সং অফ
ডেসপায়ার"-এর মতো কামোদ্দীপনামূলক কবিতা সংকলন, আবার অন্যদিকে রচনা করেছেন পরাবাস্তববাদী কবিতা, ঐতিহাসিক
মহাকাব্য, এমনকি প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইস্তাহারও।
১৯৭১ সালে নেরুদাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে
ভূষিত করা হয়। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে এই পুরস্কার প্রদান, এই ধারণা নিয়ে
প্রভূত বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিশ্রুত কলম্বিয়ান ঔপন্যাসিক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস একদা
যে নেরুদাকে "বিংশ শতাব্দীর সকল ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি" বলে বর্ণনা করেছিলেন, এটাও আমাদের কাছে সন্তোষের বিষয়। (শৌনক সরকার)
দেহজআপেল, ভরন্ত নারী, গনগনে
চাঁদ
দেহজ আপেল, ভরন্ত নারী, গনগনে
চাঁদ,
শ্যাওলার গাঢ় ঘ্রাণ লেগে থাকে তার
গায়, আর থাকে আলো-কাদার ছদ্ম প্রতীক
তোমার দেহের প্রাসাদে কোন সে স্বচ্ছ উদ্ভাস আছে আমাকে
দেখাও?
কোন সেই আদিম রাত, যাকে ছুঁতে
পারে যে কোনো পুরুষ, সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে?
দিতে পারে ইন্দ্রিয়সুখ
আহা, ভালবাসা, সে তো জল-তারায়
তুমুল সাঁতার কাটে,
যেন চলতে থাকা যাত্রাপথ,
যেন বাতাসে আকণ্ঠ
ডুব দেয়,ভালোবাসার অবিন্যস্ত ঝড় তোলে গুঁড়ো
ময়দায়,
ভালবাসা, সে তো বিদ্যুতের সঙ্গে গভীর সংঘাতে মাতে
এবং দুটো শরীর যেন মধুময়তায়
ধ্বংসাবশেষ হয়ে রয়ে যায়,
তোমার পেলব অসীমতা ঘিরি
কামার্ত চুমুতে
চিনি তোমার দূর সীমানা, নদীপথ,
গ্রাম, ইত্যাদি,
আর তোমার যৌনাঙ্গের আঁচ মেপে নিই
আমি, পাল্টে যাই সরস মধুরতায়,
আমার রক্তের সরু গলি ভেদ করে
রাতের আদিমতায় নিজেকে উজাড় করে দিই,
নিথরতায় গা ভাসিয়ে এক ঝলক বিন্দুর
মতো
মিলিয়ে যাই ছায়াশূন্যতায়।
বেশি দূরে যেওনা
বেশি দূর যেওনা, একদিনের জন্যেও
যেওনা কোথাও,
কারণ... কারণটা আমি জানিনা কী
করে বলতে হয় তোমায়,
একটি দিন দীর্ঘ কতখানি তা আমি জানি,
একটি দিন দীর্ঘ কতখানি তা আমি জানি,
থাকবো তোমার নিবিড় অপেক্ষায়,
যেভাবে পড়ে থাকে
এক ফাঁকা স্টেশন, সব
রেলগাড়ি যেখানে ঘুমের জায়গা খুঁজে নেয়।
এক প্রহরের জন্যেও যেও না
কোথাও কারণ,
তীব্র যন্ত্রণার জমা হওয়া ঘামের ফোঁটাগুলো
মুহূর্তেই গলগল করে নদী হয়ে যাবে,
আর গৃহহীন যে ধোঁয়া যা ঘর খোঁজে
অবিরাম,
তারা আমার নিখোঁজ হৃদয়ে ঢুকে
পড়বে, শ্বাসরোধ করবে আমার, ছটফট করবো আমি।
ওগো প্রিয়া, বালিয়াড়ির ওপর
হাঁটতে গিয়ে মিলিয়ে যেও না,
ওগো প্রিয়া, যেন চোখের পলকের
দ্বারা পথভ্রষ্ট হোয়োনা শূন্যতায়।
মূল কবিতা পড়া নেই। কিছু বলা উচিত নয় তাই। তবু মনে হয় 'যেন' শব্দের ব্যবহার কমানো গেলে ভাল হত প্রথম কবিতায়।
ReplyDelete