।। বাক্ ১৩৩ ।। ফ্রানৎস কাফকার গল্প ।। অনুবাদক : শানু চৌধুরী ।।





ফ্রানৎস কাফকা : তাঁর সম্পর্কে কিছু বলা বাহুল্য আজ। ৩রা জুলাই ১৮৮৩-তে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জার্মান ভাষার লেখক এবং বিংশ শতাব্দীর সাহিত্যে এক অনিবার্য নাম। কাফকার প্রাথমিক গদ্যরচনা বা স্কেচের পনেরো নম্বর গল্প ‘The street window’ ও ষোল নম্বর গল্প ‘Wish to be a Red Indian’ এখানে অনুবাদ করা হলপনেরো নম্বর গদ্যে তিনি এঁকেছেন ব্যক্তির মোনোটনি ও সমাজের দিকে তাকিয়ে নিঃসহায় হওয়ার ইঙ্গিত এবং ‘জানলা’ নামের চিত্রটিকে অপরূপ ইম্প্রেশন দিয়েছেন রূপকের মাধ্যমে। আবার ষোল নম্বর গদ্যে আশ্চর্যভাবে চিন্তাভাবনাকে ইউ-টার্ন করিয়ে এঁকে দিয়েছেন ঘোড়সওয়ারের জুতোর কাঁটা, লাগামের ছবি, দগ্ধ রূপ, এবং গদ্যের শেষ বাক্যে কিছু না টিকে থাকার পরেও টিকে থাকা ইচ্ছেটিকে মান্যতা দিয়েছেন। এই প্রবাদপ্রতিম ও চিন্তার সূত্রকে চাবুক মারা লেখকের মৃত্যু হয় ৩রা জুন, ১৯২৪ এ যক্ষ্মার কারণে।

                                        

রাস্তার দিকে জানলা


যে-ই নিঃসঙ্গ জীবন অতিবাহিত করছে এখনও, এবং দানাবাঁধা বিষণ্ণতার মধ্যেও সংলগ্ন করতে চাইছে নিজেকে কোনোকিছুর সঙ্গে, যে-ই সেটা চাইছে, সময় আর দিনের পরিবর্তনের সঙ্গে, আবহাওয়ার সঙ্গে, তার কাজকর্মের অবস্থার সঙ্গে, এই অপেক্ষার মধ্যেই সে আঁকড়ে ধরতে চাইছে কোনও একটা বাহু যেটার সঙ্গে সে জড়িয়ে থাকতে পারবে- এধরনের মানুষ খুব বেশিদিন কায়দা করে ফিকির করে চলতে পারে না রাস্তার দিকে মুখ করা একটা জানলা যদি না পায়। এবং এমনও হতে পারে সে আর কোনোকিছুই আকাঙ্ক্ষা করে না, জানালায় দাঁড়িয়ে থাকা একটা ক্লান্ত মানুষ সে। তার দৃষ্টি জনতা থেকে স্বর্গের দিকে যায়, আবার ফিরে আসে, সেটাও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেএরপরও তার সামান্য হেলে পরা মাথা, আর নিচে দেখা যাবে ঘোড়াগুলি টেনে নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের কামরা আর বিশৃঙ্খলার ট্রেন, এবং শেষমেশ মানবিক ঐকতানের দিকেই



রেড ইন্ডিয়ান হওয়ার কামনা

কেউ যদি রেড ইন্ডিয়ান হতে পারতো, মুহূর্তমধ্যে সতর্ক, ছুটতে থাকা দুর্বার ঘোড়ার ওপর বসে, বাতাসে ঠেস দিয়ে, কম্পমান মাটির ওপর কম্পিত ও ঝাঁকুনি খেতে খেতে, উড়ে চলত যতক্ষণ না একজনের খুলে যায় অশ্বারোহণের জুতোর কাঁটা, কারণ কাঁটাটার দরকারই ছিল না, ছুঁড়ে ফেলে দিত লাগাম, কারণ আদপে লাগামটার দরকারই ছিল না কোনোকালেএবং সে হয়ত দেখতেই পেল না সামনের উষরপ্রান্তরের মসৃণ ঘাসজমিটা খুলে গেছে তার সামনে, যখন ঘোড়ার গ্রীবা আর মাথা ইতিমধ্যে উধাও হয়ে গেছে

3 comments:

  1. Tumi ki jermany theke sorasori anubad kore6o go!!!

    ReplyDelete
  2. অপূর্ব দুটো গল্প। অনুবাদও অসাধারণ

    ReplyDelete